চার মযহাবের মূল্যায়ন: লা-মযহাবী ফিতনা 

(৯ম পর্ব)

মূল: ড: আবদাল-হাকিম মুরাদ(যুক্তরাজ্য)

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

মাজহাব কি এবং কেন,


Dr Abdal-Hakim Murad's online article

'Understanding the Four Madhhabs: The

problem with anti-madhhabism - 

episode- 9th


বিঃদ্রঃ ৮ম পর্বের পড় থেকে। 


এমন আরও অনেক নিয়ম আছে যেগুলো বিবৃত করে অনুমতির চেয়ে নিষেধাজ্ঞা অগ্রাধিকার পাবে। অনুরূপভাবে, পরস্পরবিরোধী হাদীসগুলোর মাঝে ফয়সালা পাওয়া যেতো কোনো সাহাবী (রা:)- এর ফতোওয়াকে সদ্ব্যবহার করে; 

মাযহাব কয়টি ও কি কি,

তবে শর্ত ছিল এই যে প্রাসঙ্গিক অন্যান্য ফতোওয়ারও তুলনা ও মূল্যায়ন করতে হতো। সবশেষে, কেয়াস (তুলনামূলক বিচার-পদ্ধতির মাধ্যমে মুজতাহিদবৃন্দের রায়) প্রয়োগ করা হতো। এ রকম একটি উদাহরণ হলো ‘সালাত আল-কুসুফ’ (সূর্যগ্রহণের নামায)-এর বিভিন্ন বর্ণনা, যা রুকূ ও সেজদার ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যার বিবরণ দিয়েছিল। উলেমাবৃন্দ এ সকল বর্ণনার সতর্ক বিচার-বিশ্লেষণশেষে ওপরে বর্ণিত কোনো পদ্ধতি দ্বারা এর সমাধান বের করতে না পেরে কেয়াস প্রয়োগ করে চূড়ান্ত

মাজহাব মানা কি জরুরি,

সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই মর্মে, যেহেতু এটিকে ’সালাত’ হিসেবেই আখ্যায়িত করা হয়েছে, সেহেতু সালাত বা নামাযের

নিয়মসিদ্ধ পদ্ধতি-ই অনুসরণ করতে হবে; অর্থাৎ, একবার রুকূ ও দু’বার সেজদা এতে থাকবে। এতদসংক্রান্ত অন্যান্য হাদীস এমতাবস্থায় ছেড়ে দিতে হবে। ঐশী শাস্ত্রলিপি থেকে শরীয়তের নিখুঁত আইন-কানুন বের করার ক্ষেত্রে পরস্পর বিরোধী দলিলের ফয়সালাসূচক এই পদ্ধতির সতর্ক প্রয়োগ

মাজহাব সম্পর্কে জাকির নায়েক

মূলতঃ ইমাম শাফেয়ী (রহ:)-এরই অনবদ্য কাজ ছিল। তাঁর সময়কার ফেকাহবিদদের মধ্যকার বিভ্রান্তি ও মতপার্থক্য

দেখতে পেয়ে এবং মনুষ্য ত্রুটি-বিচ্যুতির সম্ভাবনা যতোটুকু পারা যায়নএড়িয়ে একটি সঙ্গতিপূর্ণ ফেকাহ- পদ্ধতি প্রবর্তনের দৃঢ় সংকল্পননিয়ে তিনি তাঁর চমৎকার ‘রেসালা’ (ইসলামী ফেকাহ-বিষয়ক পুস্তক) রচনা করেন। অন্যান্য প্রধান প্রধান

শরয়ী আইনবেত্তাদের দ্বারা বিভিন্নভাবে তাঁর চিন্তা- ভাবনা সহসা গৃহীত হয়; যার দরুণ আজকে শরীয়তের আনুষ্ঠানিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে এগুলো মৌলিক বিষয় হয়ে গিয়েছে।

মাজহাব নিয়ে জাকির নায়েক,

শরয়ী দলিল-আদিল্লার ভাণ্ডার থেকে ইসলামী আইন-কানুন প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভুল-ভ্রান্তি কমানোয় ইমাম শাফেয়ী (রহ:)-এর এই পদ্ধতি ‘উসূল আল- ফেকাহ’ (ফেকাহর মূলনীতি) নামে সুপ্রসিদ্ধ হয়ে যায়। ইসলাম ধর্মের অন্যান্য শাস্ত্রের মতোই এটি মন্দ অর্থে নতুন কোনো কিছুর প্রবর্তন (বেদআত) ছিল না, বরং মূলনীতি-ভিত্তিক এমন সমাধান ছিল যা ইতোমধ্যে প্রাথমিক যুগের মুসলমানদের সময়ে দেখা গিয়েছিল।

কালের পরিক্রমায় সুন্নী মতাদর্শভিত্তিক প্রতিটি ফেকাহ- ব্যবস্থায় এই মূলনীতির আলোকে নিজস্ব নিয়ম-রীতি চালু করা হয়, যার ফলশ্রুতিতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন শাখার উদ্ভব হয় (অর্থাৎ, আমল পালনের বেলায় একেক

মযহাবের নির্দিষ্ট ফতোওয়া)। যদিও এ সব পার্থক্য হতে নিঃসৃত বিতর্ক কখনো কখনো উদ্যমী ছিল, তথাপি ইসলামের

মাজহাব কি ও কেন,

প্রথম দুই শতাব্দীতে উদ্ভূত বড় বড় অন্তঃকোন্দল ও আইনী মতপার্থক্য যা ‘উসূল আল-ফেকাহ’ শাস্ত্রের আবির্ভাব দ্বারা পরিসমাপ্ত হয়, তার তুলনায় ওই সমস্ত পার্থক্য তাৎপর্যহীন ছিল।


চলবে---------।


১০ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন 


1 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post