আপনি কেন আহলে হাদীস ত্যাগ করবেন?

আপনি কেন আহলে হাদিস ত্যাগ করবেন


------------------------------------------------

হানাফী মাজহাব কী.?

আসলে তা আপনি ভাল করে জানেনই না।


একটি কিতাব পড়ে আপনি মুগ্ধ হলেন, 

তাতে লিখা দেখলেন, রাসুলের কোনও মাজহাব ছিলনা, 

সাহাবাগন কোন মাজহাব অনুস্মরণ করেননি, 

রাসুল ছাড়া আর কারো তাকলীদ বা অন্ধ অনুস্মরণ করা যাবে না, 

যেখানে কুরআন ও সহীহ হাদিস মজুদ আছে,

 সেখানে আবার মাজহাব মানতে হবে কেন?

 মাজহাব ধর্মকে খন্ড-বিখন্ডিত করে ফেলেছে ।


★ আপনি মনে মনে ভেবে দেখলেন,

কথাগুলো তো বাস্তব সত্য, এমন অবাক করার মতো তথ্যগুলো তো আগে কখনো শুনেননি। মাজহাব নিয়ে মানুষ পড়ে আছে কেন ! 

সেটাই আপনাকে ভাবিয়ে তুলবে। এক সময় মনে মনে আপনি নিজেকে লামাজহাবী ভাবতে শুরু করবেন।


★এরপর ফেইসবুকে মতিউর রহমান মাদানী, আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, আমানুল্লাহ মাদানী, আকরামুজ্জামান, মুরাদ বিন আমজাদ, মুজাফ্ফর বিন মহসিন প্রমুখের গ্যারান্টি দেয়া বক্তব্যগুলো শুনে আপনি আরও আশাবাদী হলেন। এক সময় আপনি আপনার প্রিয় শায়েখদের বক্তব্যগুলোকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করতে থাকলেন,(অথচ নিজের অজান্তেই হক্ব মাজহাব ছেড়ে ভুলে ভরা বিতর্কিত "সালাফী মাজহাব" এর তাকলিদ ধরলেন!)

সেইসাথে আপনার অন্তরে এমন এক ধারনার সৃস্টি হলো যে, সালাফী তথা আহলে হাদিসেরা ব্যতীত বাকীরা সবাই বিদআতী ও বাতিল ফিরকা, তারাই শুধুমাত্র হকপন্থী, বাকী সব বিদআতীদের জন্য অনেক আফসোস শুরু করলেন ।


★ কিন্তু আপনি চমকে যাবেন! নিজেকে নিরপেক্ষ একটি স্থানে বসিয়ে ভাবলে বুঝতে সক্ষম হবেন যে, ইবাদতের মধ্যে যে সমস্ত বিষয় নিয়ে সালাফী শায়েখ‘রা বিষেদগার করে যাচ্ছেন এগুলো কোনোটাই ইসলামের  মৌলিক বিষয় নয়। ১২ থেকে ১৩ শত বছর পূর্বে মাজহাবের ইমামগন সাংঘর্ষিক তথা ইখতেলাফী হাদিস থেকে মাসালা বের করে যেসব বিষয়ে সমাধান দিয়ে গেছেন শায়েখ‘রা না বুঝে সেইগুলো নিয়েই বিতর্ক সৃস্টি করে করে যাচ্ছেন(অল্প বিদ্যা ভয়ংকর!)। অথচ এগুলো নিয়ে ১২০০ বছর ধরে কেউ কোন বিতর্ক সৃষ্টি করেনি।


★আপনি এখন আরো লক্ষ করবেন যে, 

শায়েখগন নিজেরাই দিশেহারা হয়ে আত্মঘাতী বক্তব্য দিয়ে চলেছেন, 

রমজান আসলে তাদের নিকট তিন রাকাত বিতর নামাজ সহীহ হয়, 

রমজানের বাইরে বিতির নামাজ এক রাকাত সহীহ হয়ে যায়। 

ঈদের নামাজ তারা কারো নিকট ১২ তাকবীর সহীহ, আবার কারো কারো নিকট ৬ তাকবীর ও ১২ তাকবীর উভয়ই সহীহ, কিন্তু তারা আমল করছেন ১২ তাকবীর।

এছাড়া বুকের ওপর হাত বাঁধা, রফ্উল য়াদাইন করা আর না করা, আমিন জোরে ও আস্তে বলা এসব বিষয়ে বিরোধপূর্ণ হাদিস থাকা সত্বেও তারা হানাফীদের বিপরীত হাদিসগুলোর ওপর জোর দিয়ে চরম ফিতনার জন্ম দিয়ে চলেছেন। অথচ এগুলো নামাযের মূখ্য বিষয় নয়।


* শুধু তাই নয়, আপনি পড়ে দেখবেন

মির্জা গালিব ও মুজাফ্ফর বিন মহসিনের কিতাবসমূহে ইদানীং তাদের জালিয়াতি ও মিথ্যাচার সম্পর্কীয় যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তা তো রীতিমত গা শিহরে ওঠার মতো কাজ । শায়েখ হয়ে এহেন গর্হিত কর্ম তাদের দ্বারা কিভাবে সংগঠিত হলো তা ভেবে আপনিও অবাক হবেন ।


আপনি দেখবেন শায়েখদের প্ররোচনায় আহলে হাদিসের অনুসারীরা বলে থাকেন, রাসুল ছাড়া আর কারো তাকলীদ করা যাবেনা, অথচ তারা আলবানী, জাকির নায়েক, মতিউর রহমান, আ. রাজ্জাক বিন ইউসুফ, মুজাফ্ফর বিন মহসিন গংদের কথার বাইরে একচুলও নড়েনা ।

তারা বলেন মাজহাব মানা যাবে না অথচ তারাই উপরোক্ত শায়েখদের মতামত (মাজহাব)কে নিজেদের আদর্শ বানিয়ে নিয়েছেন!

তারা বলেন মাজহাবের মাধ্যমে ইসলামকে খন্ড বিখন্ড করা হয়েছে অথচ তারা এখন নিজেরাই দলে দলে বিভক্ত! তারা বলেন তাদের পরিচয় শুধুমাত্র মুসলিম, অথচ তারাই আহলে হাদিস, সালাফী, মুজাহীদ, মুহাম্মদীসহ ১৬৮ দলে বিভক্ত!


★ আপনি আরও লক্ষ করবেন,লা-মাজহাবীগন মাজহাবীদের কে বিদাতী বলে ক্ষান্ত হয়নি তারা নিজেরাই নিজেদেরকে বিদাতী, কাফের ফতোয়া দিয়ে আলোড়ন সৃস্টি করে চলেছেন!

তারা বলে, সাহাবাদের সময়ে কোন মাজহাব ছিলনা তাহলে মাজহাব মানতে হবে কেন?

* তাহলে মনে রাখবেন, সাহাবাদের যুগে তো বুখারী, মুসলিম, সহীহ হাদিস, জয়ীফ হাদিস, আহলে হাদিস এ সমস্ত কিছুই ছিলনা, তাহলে এসব মানতে হবে কেন?


★ আপনি আরো খেয়াল করবেন,

কুরআন ও হাদিসের ব্যাখ্যা নিয়ে মাজহাবীদের মধ্যে আক্বিদাগত কিছু মতপার্থক্য ছিল, কিন্তু ইবাদত নিয়ে তাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র দ্বন্দ্ব ছিলনা। ইবাদত তথা নামাজ ছিল মাজহাবীদের ঐক্যের প্রতীক। 

আগে তারা শান্তি মনে নামাজ পড়তো, 

সেই নামাজের মধ্যে ছোটখাটো বিষয় কে বড় করে তুলেধরে আহলে হাদিসেরা এক চরম ফিতনার সৃস্টি করে গোটা মুসলিম উম্মাকে খন্ড-বিখন্ডিত করার প্রয়াস চালাচ্ছেন! 


★ দেশের ৮০% মুসলিমের মধ্যে ২০% মুসলিমও নামাজ পড়েনা, 

বেনামাজিদের কে নামাজি বানাবার কোন মিশন আহলে হাদিস-সালাফীদের নিকট নেই। যারা নামাজ পড়ে তাদেরকে নিয়েই তারা টানাহ্যাঁচড়া শুরু করেছে। ফিকাহ্ ও মাসালার বিষয়গুলো নিয়ে সালাফী শায়েখেরা হানাফী আলেমদের সাথে বসে সমাধান করার চেষ্টা না করে মিডিয়া ও ফেইসবুকের মাধ্যমে সাধারন মানুষের মধ্যে চরম ফিতনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়ে পুরা মুসলিম উম্মাকে এক ভয়াবহ ফিতনার দিকে ঠেলে দিয়েছে!


★ এসব কারণে আপনি আহলে হাদিস ত্যাগ করে আবার সঠিক পথে ফিরে আসবেন, আল্লাহ আমাদের ঈমানকে হেফাজত করুন এবং সবাইকে সঠিকটা বুধার তাওফিক দিন….. আমিন । 


collected & modified

1 Comments

  1. মাশাআল্লাহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট

    ReplyDelete

Post a Comment

Previous Post Next Post