চার মাজহাবের মূল্যায়ন, লা-মযহাবী ফিতনা
(৭ম পর্ব)
মূল: ড: আবদাল-হাকিম মুরাদ (যুক্তরাজ্য)
অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন
Dr Abdal-Hakim Murad's online article
'Understanding the Four Madhhabs: The
problem with anti-madhhabism' - 7th episode
বিঃদ্রঃ ৬ষ্ঠ পর্বের পড় থেকে।
’নাসখ’ (রহিতকারী শরয়ী দলিল) দুই প্রকার: ‘সারিহ’ (সুস্পষ্ট) ও ‘দিমনি’ (অন্তর্নিহিত)। পূর্বোক্তটি সহজে বোঝা বা চিহ্নিত করা যায়, কেননা তাতে সংশ্লিষ্ট ছিল এমন শাস্ত্রলিপি যা সুনির্দিষ্টভাবে জ্ঞাত করেছে পূর্ববর্তী কোনো আইনের পরিবর্তন। উদাহরণস্বরূপ, কুরআন মজীদে একটি আয়াতে করীমা (২:১৪২) আছে যেটি মুসলমানদেরকে জেরুসালেম
থেকে কাবা শরীফের দিকে কেবলা পরিবর্তনের আদেশ করে। হাদীসশাস্ত্রে এ ধরনের দৃষ্টান্ত আরও ঘন ঘন দেখা যায়; যেমন - ইমাম মুসলিম (রহ:) বর্ণিত একটি হাদীস এরশাদ ফরমায়:
“আমি ইতিপূর্বে তোমাদেরকে কবর যেয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম; এখন থেকে যেয়ারত করো!” এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দীস উলেমাবৃন্দ বলেন যে ইসলামের সূচনালগ্নে মূর্তি পূজোর স্মৃতি মানুষের মনে তখনো তাজা থাকায় কিছু মুসলমান তাতে বিভ্রান্ত হতে পারেন এমন আশংকা থেকে কবর যেয়ারত নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর একত্ববাদ
সংক্রান্ত মুসলমানদের বিশ্বাস সুদৃঢ় হওয়ার পরপরই এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। আজ তাই কবরস্থদের
জন্যে দোয়া করা এবং আখেরাতের কথা স্মরণ করার জন্যে কবর যেয়ারত করা মুসলমানদের মাঝে একটি আদিষ্ট প্রথা। [উক্ত হাদীসের আদেশ যখন জারি হয়, তখন মুসলমানদের কবর ছিল না; সবই অমুসলিমদের সমাধি ছিল। মুসলমানবৃন্দ
ইন্তেকাল করা আরম্ভ করলে তাঁদের মাযার- রওযা যেয়ারতের আদেশ জারি হয় - অনুবাদক] ’নাসখ’-এর দ্বিতীয় প্রকারটি আরও সূক্ষ্ম এবং এটি অহরহ-ই প্রাথমিক যুগের জ্ঞান বিশারদদের মেধার সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রয়াস বা খাটুনি আদায় করে নিয়েছিল। এতে সম্পৃক্ত ছিল সে সব শাস্ত্রলিপি যা পূর্ববর্তীগুলোক নাকচ বা ব্যাপকভাবে সংস্কার করেছিল,
কিন্তু তার কোনো উল্লেখ বাস্তবে তাতে ছিল না। উলেমাবৃন্দ এর বহু উদাহরণ পেশ করেছেন, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সূরা বাকারার দুটো আয়াত, যেখানে বিধবা নারীদের ‘ইদ্দত’-
এর সময় কোনো সম্পত্তি থেকে কীভাবে ভরণ- পোষণ করা হবে সে সম্পর্কে পৃথক পৃথক আদেশ জারি হয়েছিল (২:২৪০ এবং ২:২৩৪)। আর হাদীসশাস্ত্রে এমন একটি দৃষ্টান্ত আছে যা’তে মহানবী (দ:) তাঁর সাহাবা-এ- কেরাম (রা:)-কে বলেছিলেন তিনি অসুস্থতাহেতু বসে বসে নামায পড়লে তাঁরাও যেন তাঁর ইমামতিতে বসে নামায পড়েন। এই
হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রহ:) কর্তৃক বর্ণিত। তথাপি আমরা ইমাম মুসলিম (রহ:)-এরই বর্ণিত আরেকটি হাদীসে দেখতে পাই, রাসূলুল্লাহ (দ:) বসে নামায আদায়ের সময় সাহাবা-এ- কেরাম (রা:) তাঁর ইমামতিতে দাঁড়িয়ে নামায পড়েন। এই স্পষ্ট পরস্পরবিরোধিতা কালানুক্রমিক সযত্ন বিশ্লেষণের দ্বারা সমাধান করা হয়েছে, যা’তে প্রতীয়মান হয় যে শেষোক্ত
ঘটনাটি পূর্বোক্ত ঘটনার পরেই ঘটেছিল। আর তাই তা পূর্বোক্ত ঘটনার চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে। মহান উলেমাদের ফেকাহ শাস্ত্রে এটি যথাবিহিত গুরুত্ব সহকারে লিপিবদ্ধ
হয়েছে।
চলবে-------------।
Nice
ReplyDeleteNice post
ReplyDeletePost a Comment