দ্রুত বিবাহ হওয়ার আমল, The period of quick marriage
| The period of quick marriage |
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। ওয়াসসালাতু ওয়াসসালামু আলা নাবিয়্যিহী মোহাম্মদী ওয়া আলেহী ওয়া আসহাবী আজমাঈন।
| The period of quick marriage |
সম্মানিত দ্বীনি ভাই ও বোনেরা, আমাদের দেশের যুব সমাজ যেসকল সমস্যার মধ্যে আছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো সময় মতো বিয়ে না হওয়া,আমাদের সমাজে এমন অনেক যুবক যুবতীরা আছে যাতা মাস্টার্স ডিগ্রী করে ভালো চাকরিও করতেছে কিন্তু বিয়ে করতে পারতেছেনা,
মা বা চাচ্ছেন ভালো ঘরে বিয়ে দিতে কিন্তু হচ্ছে না। তেমন উপযুক্ত পাত্র বা পাত্রী পাচ্ছে না। আসলেও বেঙ্গে যাচ্ছে,
এমন অনেক সমস্যায় রয়েছেন আমাদের দেশের অনেক পরিবার, যাদের সময় মতো বিয়ে হয় না, ছেলে বা মেয়ে হওক। এটা আমাদের যুব সমাজের জন্য কঠিন সমস্যা।
সময় মতো বিয়ে না হলে ছেলে বা মেয়ে হওক তারা বিভিন্ন পাপাচারে জরিয়ে যাওয়ার সংখ্যা টা বেড়ে যায়। আমাদের দেশের সামাজিক যে অবস্থা, একটা মেয়ে যখন বড় হয় তাকে নিয়ে তার মা বাবা চিন্তিত থাকে কখন কি হয়ে যায়, এটা একটা বাস্তবতা।
এর জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবিদেরকে যথা সময়ে, বিয়ে করার জন্য উৎসাহিত করতেন তিনি নিজে বিবাহ পড়াতেন যথা সময়ে বিবাহর জন্য তিনি বলেছেন। বিবাহ করা সুন্নত ।
যাদের এমন সমস্যা আছে যারা ভালো পাত্র বা পাত্রী খুজতে ছেন তাদের জন্য আজকের আমল, আজ যে আমলে কথা বলবো তা পবিত্র কুরআন শরীফের একটি ঘটনা।
হযরত মুসা আঃ এর। যে আমল দ্বারা হযরত মুসা আঃ ভালো মেয়ে বিয়ে করেছেন, সে আমলের কথা বলবো আজ, আপনি যদি সত্যিকারে ভালো মেয়ে বা ভালো ছেলে বিয়ে করতে চান, পবিত্র কুরআনের আমল গুলো পাক পবিত্র হয়ে সহি শুদ্ধ নিয়তে করবেন ইনশাআল্লাহ মহান আল্লাহ তায়ালা আপনার মনে নেক ইচ্ছে কবুল করবেন। তার আগে ঘটনা টি বলি পবিত্র কুরআন শরীফ অনুযায়ী।
হযরত মুসা আঃ এর ঘটনা
যেদিন হযরত মূসা (আঃ) মাদইয়ানের কূপের পাড়ে উপনীত হন, সেদিন শোয়ইব (আঃ) এর কন্যাদ্বয়কে রাখালদের ভীড়ের সাথে সাথে আরেকটি কারণেও তথায় অপেক্ষা করতে হয়েছে। তা হচ্ছে, রাখালরা নিজেদের পশুগুলোকে পানি পান করিয়ে যাবার সময় কূপের মুখে পাথর চাপা দিয়ে যায়।
এ পাথরটি ছিল অত্যন্ত্ম ভারী। এটি সরাতে চল্লিশ জন লোকের প্রয়োজন পড়তো। আর যে ডোল দিয়ে পানি উঠাতে হত সেটিও অত্যন্ত্ম ভারী ছিল বিধায় রাখালদের চলে যাবার পরও শোয়াইব (আঃ) এর কন্যাদ্বয়কে কূপ রাখালদের আগমণের অপেক্ষা করতে হয়েছে।
তারা এলে কূপের মুখের পাথর সরাবে এবং ডোল দিয়ে পানি উঠিয়ে দিবে, তবেই তারা নিজেদের পশুগুলোকে পানি পান করিয়ে ঘরে ফিরে যাবে। মুসা (আঃ) দীর্ঘখন পর্যন্ত তাদেরকে অপেক্ষারত দেখে কারণ জিজ্ঞাসা করলে
তারা রাখালদের ভীড়, কূপের পাথর এবং ভারী ডোল দিয়ে পানি উঠাতে না পারার কথা ব্যক্ত করে।
তাদের কথা শুনে মূসা (আঃ) একাই কূপের মুখের পাথর তুলে পানি উঠিয়ে দেন এবং কন্যাদ্বয় পশুগুলোকে পানি পান করিয়ে গৃহঅভিমুখে ফিরে যায়।
মেয়ে দু’টি চলে যায় মুসা (আঃ) পুনরায় বৃক্ষের ছায়ায় গিয়ে বসে পড়েন। এসময় তাঁর খুধা তৃষ্ণা এবং দৈহিক অÿমতা অবসাদগ্রস্থতা তীব্রভাবে অনুভূত হতে থাকে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’য়ালা এরশাদ করেন-
فسقي لهما ثم تولي الي الظل فقال رب اني لما انزلت الي من خير فقير-
অর্থঃ অনন্তর মুসা (আঃ) তাদের (শোয়াইব (আঃ) এর কন্যাদ্বয়ের) পশুগুলোকে পানি পান করালেন, অতঃপর (তথা হতে) সরে গিয়ে ছায়ায় বসলেন। তখন দোয়া করলেন, হে আমার রব! আমার প্রতি আপনি যে নেয়ামত পাঠান আমি তার মুখাপেক্ষী । -(সুরাঃ কাসাস, আয়াতঃ ২৪)
মুসা (আঃ) শোয়াইব (আঃ) এর কন্যাদ্বয়ের পশুগুলোকে পানি উঠিয়ে দেবার পর তারা কোন প্রকার কথাবার্তা ছাড়াই চলে গেলেও মূসা (আঃ)- এর নৈতিক শুচি শুদ্ধতা, মার্জিত আচরণ, চলন-বলন, অনন্য দৈহিক শক্তি সামর্থ্য ইত্যাদি গুণ-বৈশিষ্ট্য তাদের দৃষ্টি এড়াতে পারে নাই।
কারণ, তারা পাথর সরানো, ডোল বয়ে পানি উঠানোতে দৈহিক শক্তিমত্তা এবং তাদের কথাবার্তায় নৈতিক শুচি শুদ্ধতার স্বাক্ষর পেয়েছেন। ঘরে ফিরেও দুই বোন এ অপরিচিত যুবকের মাঝে পরিদৃষ্ট গুণ বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলাপ আলোচনা করেছিলেন।
তাদের কথার আওয়াজ হযরত শোয়ইব (আঃ)- এর কর্ণগোচর হয়। কেননা, অন্য দিন তারা এত দ্রত ঘরে ফিরতে পারে না। আজকে কি করে সম্ভব হলো তা জিজ্ঞাসা করেন। তারা পিতার কাছে ঘটনা সবিস্তারে বিবৃত করল।
তারা এও বলল, যুবকটি অতুল দৈহিক শক্তি ও সুঠাম দেহের অধিকারী, পুণ্যবান ও আমানতদার। সুতরাং আমাদের মনে হয়, এ যুবক কে আমাদের ঘর গৃহস্থলীর কাজের জন্য রেখে দিলে ভাল হবে।
কারণ, যে কোন কাজ সুষ্ঠুভাবে সমাধার জন্য দৈহিক শক্তিমত্তা এবং আমানতদারি- এ দুটি গুণ বৈশিষ্ট্যই সর্বাধিক প্রয়োজন। হযরত শোয়াইব (আঃ)ও ঘর গৃহস্থলীর কাজ সুষ্ঠভাবে সমাধার জন্য দৈহিক শক্তিমত্তার অধিকারী একজন আমানতদার লোকের প্রয়োজন অনুভব করছিলেন।
কন্যাদ্বয়ের নিকট যুবকের কথা জানতে পেরে তিনি তাকে ডেকে আনার জন্য কন্যা ‘সফুরা’ কে পাঠান।
শোয়াইব (আঃ) এর কন্যা সফুরা অতি সংযত ভাবে, বেশবাসে সেকালে প্রচলিত পর্দারীতি রক্ষা করে মূসা (আঃ)- কে ডেকে আনার উদ্দেশে গমন করেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’য়ালা কোরআন মাজিদে ইরশাদ করেন-
فجاءته احداهما تمشي علي استحياء قالت ان ابي يدعوك ليجزيك اجرما سقيت لنا-
অর্থঃ তখন কন্যাদ্বয়েন একজন সলজ্জভাবে চলতে চলতে এলো, সে বলল, আমার আব্বা আপনাকে ডাকছেন, আপনি যে পানি পান করিয়ে দিয়েছেন তার বিনিময় প্রদানের জন্য।
মেয়েকে পাঠানোর সময় হযরত শোয়াইব (আঃ) পানি পান করানোর বিনিময় প্রদানের উদ্দেশে মূসা (আঃ) কে ডেকে পাঠান নাই।
বিনিময় প্রদান করতে ডেকেছেন- এটা শোয়াইব (আঃ) এর কন্যার অনুমাননির্ভর উক্তি। কারণ, তারা যখন মূসা (আঃ)- কে কর্মে নিযুক্ত করার প্রস্তাব করেছিলেন, তখন শোয়াইব (আঃ) এ প্রস্তাবের প্রতি কোন প্রকার সম্মতি প্রকাশ করে নাই।
তাই কন্যা অনুমান করেছে, সম্ভবত আব্বা এ যুবককে পানি পান করানোর বিনিময় প্রদানের উদ্দেশ্যেই ডেকে পাঠিয়েছেন। কেননা, কন্যারা আগে থেকেই দেখে আসছেন, তাঁদের আব্বা কারো দ্বারা ন্যূনতম কোন কাজ করালেও বা কেউ নিজের থেকে কোন সাহায্য সহায়তা করলে তিনি তার বিনিময় প্রদান করেন।
পিতার আচরিত রীতিই কন্যাকে বিনিময় প্রদানের কথা বলতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
কিন্তু মূসা (আঃ) বিনিময় প্রদানের কথা শুনে ভাবনায় পড়ে যান। কারণ, তিনি তো কোন বিনিময় লাভের আশায় কন্যাদ্বয়কে সহায়তা করেন নাই। বরং মানবিক দায়িত্ব পালন করেছেন মাত্র। আর মানবিক দায়িত্ব পালন করে বিনিময় গ্রহণ করা কোন ভদ্র মানুষের রীতি হতে পারে না। অন্য দিকে একজন বৃদ্ধ সন্মানিত মানুষের আহবান প্রত্যাখ্যান করাও অসমীচীন।
এসব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে তিনি শোয়াইব (আঃ) এর কন্যার সাথে গমন করেন।
যেহেতু মূসা (আঃ) এখানে অপরিচিত মানুষ, পথঘাট তাঁর অজানা অচেনা, তাই শোয়াইব (আঃ) এর কন্যা তাঁকে পথ দেখিয়ে নেওয়ার উদ্দেশে আগে চলতে চাইলেন।
মূসা (আঃ) ভাবলেন, উঠতি বয়সের একটি মেয়ে সামনে দিয়ে পথ চলতে থাকলে তার প্রতি দৃষ্টি পতিত হওয়াই স্বাভাবিক, এতে নৈতিকতা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
তাই তিনি বললেন, বোন! তুমি পেছনে থেকে আমাকে পথ দেখাতে থাক। আমি ভুল পথে চলে গেলে তুমি আমাকে পথনির্দেশ করো।
এভাবে শোয়াইব (আঃ) এর কন্যাকে পেছনে রেখে তার মৌখিক নির্দেশে মূসা (আঃ) শোয়াইব (আঃ) এর আবাস্থলে পৌছে যান।
শোয়াইব (আঃ) এর বাড়ীতে পৌঁছার পর তিনি মূসা (আঃ)-কে খেতে আহবান করেন। এ আহবানের জবাবে মূসা (আঃ) বললেন, আল্লাহ আপনার ভালো করুন।
তাঁর এ কথা বলার উদ্দেশ্য, তিনি মানবিক সাহায্য দানের বিনিময় স্বরুপ কিছু গ্রহণ করতে সম্মত নন। শোয়াইব (আঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, কেন খাবে না, তুমি কি ক্ষুধার্ত নও।
মূসা (আঃ) বল্লেন, আমি অবশ্যই ক্ষুধার্ত এবং তা খুব বেশী রকমেই। কিন্তু কাউকে কোন মানবিক সাহায্য দানের বিনিময়ে পৃথিবী পূর্ণ স্বর্ণ হলেও আমি তা গ্রহণে প্রস্তুত নই। কেননা, মানবিক সাহায্য সহায়ত প্রদান আখেরাতের আমল। আর আমি এমন এক বংশধারার সন্তান, যারা কোন মূল্যেই আখেরাতের কোন আমল বিক্রি করতে রাজি নয়।
এবার শোয়াইব (আঃ) বল্লেন তোমাকে খাওয়ানো কোন কিছুর বিনিময়ে নয়, বরং অতিথিপরায়ণতা আমার উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত। তাই আমি অতিথি অভ্যাগতদেরকে আহার করিয়ে থাকি।
সুতরাং তুমি যে কারণে শংকিত হয়ে খেতে অস্বীকার করছ, এখানে এমন কোন কারণ অনুপস্থিত।
শোয়াইব (আঃ) এর উত্তর শুনে মূসা (আঃ) তাঁর সাথে খেতে বসে যান। খাওয়া শেষে হযরত শোয়াইব (আঃ) তাঁর নাম, পারিবারিক সমগ্র অবস্থা এবং কেনই বা তাঁর মাদইয়ানে আসা ইত্যাদি বিষয় জিজ্ঞাসা করলেন। মূসা (আঃ) তাঁর নিকট মাদইয়ানে উপনীত হওয়ার কারণসহ সব ঘটনা বর্ণনা করেন।
তার বর্ণনা শুনে শোয়াইব (আঃ) তাঁকে অভয় দান করেন। কোরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
فلما جاءه وقص عليه القصص قال لاتخف نجوت من القوم الظالمين
অর্থঃ অতঃপর মূসা যখন তাঁর নিকট আসলেন এবং সমগ্র অবস্থা বিবৃত করলেন, তখন তিনি বললেন, ভীত হয়ো না। তুমি জালেমদের থেকে রক্ষা পেয়েছ। (সূরা কাসাস, আয়াত ২৫)
শোয়াইব (আঃ) হযরত মূসা (আঃ) -কে সান্তনা ও অভয় দিয়ে বললেন, এখন তুমি সম্পূর্ণ নিরাপদ। ভয়ের কারণ নাই। কারণ তুমি ফেরআউনের রাজত্বাধীন এলাকার বাইরে এসে গেছ।
এখানে ফেরআউনের রাজকীয় কর্তৃত্বের কোন কার্যকারিতা নাই, তাই তোমারও শংকিত থাকার কোন কারণ নাই।
শোয়াইব (আঃ) এর কন্যাদ্বয় পর্দার আড়ালে তাদের পিতাও ভীন দেশী যুবকের কথোপকথন শুনছিলেন। কন্যাদ্বয়ের মধ্য থেকে সফুরা পিতাকে বলল, আব্বা! এ যুবককে আমাদের সাংসারিক কাজকর্মের জন্য রেখে দিন। কেননা, এ যুবক দৈহিক শক্তিমত্তার অধিকারী এবং আমানতদার। আর সাংসারিক কাজকর্মে এমন ধরনের লোকেরই প্রয়োজন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’য়ালা কোরআন মাজীদে ইরশাদ করেন-
قالت احداهما يابت استاجره ان خير من استاجرت القوي الامين
অর্থঃ কন্যদ্বয়ের একজন বলল, আব্বা! আপনি তাঁকে কর্মচারী রাখুন, কেননা, সে উত্তম কর্মচারী ও শক্তিশালী এবং আমানতদার। (সুরা কাসাস, আয়াত ২৬)।
কন্যার এ প্রস্তাবে শোয়াইব (আঃ) বুঝে ফেললেন, ভিন দেশী অপরিচিত এ যুবক তাঁর কন্যাদ্বয়ের কাছে পছন্দনীয়। কারণ, মানুষের সাধারণ প্রকৃতি হচ্ছে- অপছন্দনীয় কোন লোকের প্রশংসা করে না।
এক্ষেত্রে তাঁর কন্যাদ্বয় এ যুবকের দৈহিক শক্তিমত্তা ও আমানতদারী প্রশংসা করছে। তিনি কন্যার কাছে জানতে চাইলেন,
তোমরা তাঁর আমানতদারী গুণের পরিচয় পেলে কি করে। শক্তিমত্তার পরিচয় তো পেয়েছ তোমাদের পশুগুলোকে কুপ থেকে পানি পান করানোর মাধ্যমে। কিন্তু আমানতদারী গুণের পরিচয় তো তোমাদের পাবার কথা নয়।
কন্যাদ্বয় উত্তর দিলো, পানি পান করানোর সময় এবং আপনার আহবানে আমাদের ঘরে আসার সময় পথিমধ্যে আচার-আচরণ চলন বলনে আমরা তাঁর আমানতদারী গুণের পরিচয় লাভ করেছি।
শোয়াইব (আঃ) কন্যাদ্বয়ের যুক্তি স্বীকার করেন। যুবক মূসা (আঃ) সম্পর্কিত কন্যাদ্বয়ের কথাবার্তায় আশ্বসত্ম হয়ে হযরত শোয়াইব (আঃ)- এর আস্থা হল, আমি যদি কন্যাদ্বয়ের কাউকে এ যুবকের নিকট বিয়ে দেবার প্রস্তাব করি তাহলে সে অমত করবে না।
তাঁর এরূপ আস্থার ভিত্তি স্থল-তার কন্যাদ্বয় যখন যুবককে কর্মচারী রাখার প্রস্তাব করে, তখন সে তা অস্বীকার করে নাই। সুতরাং কন্যা দানের প্রস্তাব কর্মে নিযুক্ত করার প্রস্তাবের চাইতে উত্তম। তাই তাঁর অস্বীকৃত হবার কথা নয়।
অতএব, শোয়াইব (আঃ) ভিন দেশী অপরিচিত যুবক মূসা (আঃ)- এর নিকট সরাসরি নিজের কন্যাকে বিয়ে দেবার প্রস্তাব দেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’য়াল ইরশাদ করেন-
قال اني اريد ان انكحك احدي ابنتي هاتين علي ان تاجرني ثمني حجج فان اتممت عشرا فمن عندك وما اريد ان اشق عليك ستجدني ان شاء الله من الصالحين-
অর্থঃ তিনি (শোয়াইব (আঃ) তাকে (মূসা (আঃ) কে বললেন, আমি আমার এই কন্যাদ্বয়ের একজন কে তোমার সাথে বিয়ে দিতে ইচ্ছা করি- শর্ত হলো, তুমি আট বছর আমার চাকরি করবে (এটা বিয়ের মহরানা), অতঃপর তুমি যদি দশ বছর পূর্ণ কর তবে তা তোমার পক্ষ হতে (অনুগ্রহ) হবে, আর আমি তোমার উপর কোন চাপ প্রয়োগ করতে ইচ্ছা করি না; আল্লাহর ইচ্ছায় তুমি আমাকে সদাচারী পাবে। (সূরা কাসাস, আয়াত ২৭)
হযরত মূসা (আঃ) শোয়াইব (আঃ) এর প্রস্তাব গ্রহণ করে বললেন-
قال ذالك بيني و بينك ايما الاجلين قضيت فلا عدوان علي والله علي ما نقول و كيل-
অর্থঃ তিনি (মূসা (আঃ)) বললেন, আমারও আপনার মাঝে এটাই সিদ্ধান্ত; এ দুই মেয়াদের যেটাই পূর্ণ করি, আমার প্রতি কোন বাধ্যবাধকতা থাকবে না। আর আমরা যা বলছি, আল্লাহই এর সাক্ষীরুপে যথেষ্ট। -(সূরা কাসাস, আয়াত ২৮)
হযরত শোয়াইব (আঃ) এর সাথে চুক্তি মোতাবেক মূসা (আঃ) আট বছর পর্যন্ত তাঁর কর্মে নিযুক্ত থাকেন। এমনকি যে দুই বছর ইচ্ছাধীন ছিল তাও পূরণ করেন। এতে পুরা দশ বছরই তিনি শোয়াইব (আঃ) এর কর্মে নিযুক্ত থাকেন। আর শোয়াইব (আঃ)ও চুক্তির শর্তানুযায়ী কন্যা সফুরাকে হযরত মূসা (আঃ) এর নিকট বিয়ে দেন।
চুক্তির বাধ্যবাধকতা আট বছর ও ইচ্ছাধীন দুই বছর মোট দশ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করার পর হযরত মূসা (আঃ) শোয়াইব (আঃ) এর সমীপে নিবেদন করলেন, তিনি মিসরে অবস্থিত তাঁর মা ও বোনের সাথে দেখা করতে যেতে চান।
হযরত শোয়াইব (আঃ) তাঁকে সস্ত্রীক মিসর গমনের অনুমতি প্রদান করেন। বিদায় কালে একটি লাঠি হাতে তুলে দেন। কথিত আছে, এ লাঠি হযরত আদম (আঃ) জান্নাত থেকে সঙ্গে করে আনেন এবং আদম (আঃ) এর হাত থেকে অনেক নবী রাসূলের হাত বদল হয়ে অবশেষে হযরত শোয়াইব (আঃ) এর হাতে পৌছে। আদম (আঃ) কর্তৃক জান্নাত হতে আনীত লাঠিই শোয়াইব (আঃ) মিসর অভিমুখে বিদায়কালে হযরত মূসা (আঃ) কে প্রদান করেন। আর এই লাঠি দিয়েই মূসা (আঃ) ফেরআউনের জাদুকরদের সাথে বিজয় হয়েছেন।
আমলের মূল সারাংশ
হযরত মুসা আঃ যখন গাছের ছায়ায় বসলেন, তখন তার অসহায়ত্বের কথা মনে পড়ে গেল, কোথা থেকে কোথায় আসলেন, আজ খাবার নেই, বিয়ে করা প্রয়োজন, কে আমাকে বিয়ে দিবে এসব না না চিন্তা ভাবনায় পড়ে গেলেন হযরত শোয়ায়েব আঃ এর মেয়েদের কথা স্বরন করে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে যে ফরিয়াদ করেছিলেন যে দোয়া পড়ে। সেই দোয়া যদি সহী শুদ্ধ ভাবে খাঁটি নিয়তে পড়ে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য চাইবে মহান আল্লাহ তায়ালা তার মনের নেক ইচ্ছে কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। এই আমলের দ্বারা হযরত মুসা আঃ এর বিয়ে হয়েছিল অবাব দূর হয়েছিল।
নিয়ম
খাঁটি নিয়তে কেউ যদি এই দোয়া টি ৪১ দিন, প্রতিদিন ১০০ বার অথবা ৫ ওয়াক্ত নামাজের পড়ে ২১ বার করে আমল করে। ছেলে যদি করে নেক্কার মেয়ে পাবে, যদি মেয়ে করি তাহলে নেক্কার ছেলে পাবে।
আমল
رب اني لما انزلت الي من خير
فقير
রাব্বি ইন্নী লিমাআনঝালতা ইলাইইয়া মিন খাইরিন ফাকীর।
আপনারা পবিত্র কুরআন থেকে আরবি উচ্চারণে আমল করবেন, পবিত্র কুরআনের সব উচ্চারণ বাংলায় হয় না তাই আরবীতে পড়ার চেষ্টা করবেন।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের পবিত্র কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন, আমিন।
অর্থাৎঃ হে আমার রব! আমার প্রতি আপনি যে নেয়ামত পাঠান আমি তার মুখাপেক্ষী । -(সুরাঃ কাসাস, আয়াতঃ ২৪ এর অংশ )
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাই কে পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক জীবনযাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
মাশাআল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ, অনেক অনেক ভালবাসা রইলো
ReplyDeleteমাশাআল্লাহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
ReplyDeletePost a Comment