চার মযহাবের মূল্যায়ন: লা-মযহাবী ফিতনা১ম পর্ব
মূল: ড: আবদাল-হাকিম মুরাদ (যুক্তরাজ্য)
অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন
Bengali translation of Dr Abdal-Hakim Murad's
online article 'Understanding the Four
Madhhabs: The problem with anti-madhhabism
উম্মতে মোহাম্মদীর (মুসলমান সম্প্রদায়ের) গত এক সহস্র বছরেরও বেশি সময়কালের সবচেয়ে বড় অর্জন নিঃসন্দেহে এর অভ্যন্তরীন বুদ্ধিবৃত্তিক অবিভক্তি। হিজরী পঞ্চম শতক থেকে প্রায় বর্তমান যুগ পর্যন্ত, বিভিন্ন রাজবংশের মধ্যকার সংঘাতের বাহ্যিক নাটকীয়তা সত্ত্বেও সুন্নী মুসলমান সমাজ
নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক ধর্মীয় শ্রদ্ধা ও ভ্রাতৃত্ববোধের এক প্রায় অব্যর্থ মনোভাব লালন করে আসছেন। এটি একটি চমক
সৃষ্টিকারী বাস্তবতা যে কোনো ধর্মযুদ্ধ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা বা হযরানি-ই তাঁদেরকে বিভক্ত করতে পারে নি এই দীর্ঘ
সময়কালে, যা অন্যান্য দিক থেকে ভীষণ কঠিন ছিল। ধর্মীয় আন্দোলনসমূহের ইতিহাস বলে যে এটি একটি অসাধারণ ফলাফল। ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) ও তাঁর শিষ্যদের
ব্যাখ্যাকৃত সমাজবিদ্যার স্বাভাবিক দৃষ্টিভঙ্গি হলো, কোনো ধর্ম তার প্রাথমিক কিছু সময় ঐক্যের স্বাদ আস্বাদন করে থাকে এবং তার পর প্রতিদ্বন্দ্বী নেতৃত্বের দ্বারা ক্রমবর্ধমান তিক্ত বিভক্তিতে পতিত হয়। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো খৃষ্টধর্ম;
তবে এতে অন্যান্যদেরও যোগ করা যায়, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত মার্কসবাদের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দর্শনও। বাহ্যতঃ এই পরিণতি এড়ানোয় ইসলাম ধর্মের সামর্থ্য বা ক্ষমতা তাক লাগানোর মতো বিষয়, আর তাই এটি সযত্ন বিশ্লেষণের দাবি রাখে অবশ্য এর একটি সহজ, সরল ধর্মীয় ব্যাখ্যা আছে।
ইসলাম সর্বশেষ বা চূড়ান্ত ধর্ম, বলা যেতে পারে বাড়ি ফেরার শেষ বাস; আর তাই এটি অধিকতর ক্ষয়রোগগুলো থেকে খোদায়ী হেফাযত তথা সুরক্ষাপ্রাপ্ত। এ কথা সত্য যা আবদুল ওয়াদুদ শালাবী বলেছেন এই মর্মে যে, ইসলামের ঊষালগ্ন থেকে এক আধ্যাত্মিক ব্যবস্থা (বা প্রশাসন) সক্রিয় রয়েছে – যে বিষয়টি বেশ কিছু সংখ্যক হাদীস দ্বারা ভালভাবে সমর্থিত। বিশেষতঃ বিধাতা এই উম্মাহকে অবহেলা করেন নি।
পূর্ববর্তী ধর্মগুলো আলতোভাবে বা বেদনাদায়ক পন্থায় বিভক্তি ও অপ্রাসঙ্গিকতার গহ্বরে পতিত হতে থাকলেও, ক্রমান্বয়ে গুণগত মান হারানো ইসলামী ধার্মিকতা বা ভক্তির মাঝে এমন এক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে যার দরুণ এটি স্বর্ণযুগে গুরুত্বারোপিত ঐক্যের মনোভাবের বা চেতনাবোধের অধিকাংশই বজায় রাখতে পেরেছে। আমীর (শাসক) ও
রাজনীতিবিদদের ভাঁড়ামি যেখানেই নিয়ে যাক না কেন, মো’মেন তথা বিশ্বাসীদের ভ্রাতৃত্ববোধ যেটি খৃষ্টধর্ম ও আরও কিছু ধর্মেরbপ্রাথমিক পর্যায়ে বাস্তবতা ছিল, তা গত এই
চৌদ্দ’শ বছরে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ঐশী ধর্ম ইসলামের সর্বশেষ ও নিশ্চায়ক (অনুসারী) সমাজের অধিকাংশ সদস্যের জন্যে অপরিহার্য নীতি হিসেবে গৃহীত হয়েছে। এর কারণ সহজ এবং তর্কাতীত: আল্লাহতা’লা আমাদেরকে এই ধর্ম দিয়েছেন তাঁরই চূড়ান্ত বিধান হিসেবে, আর তাই পৃথিবীর
শেষ দিনগুলো পর্যন্ত এটি টিকে থাকবে এরই তাওহীদ (একত্ববাদ), এবাদত (উপাসনা) ও নৈতিকতার অত্যাবশ্যকীয় মৌলনীতিমালাসহ।
চলবে---------।
Nice Post
ReplyDeleteমাশাআল্লাহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট ধন্যবাদ এমন একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ReplyDeleteঅসংখ্য ধন্যবাদ
ReplyDeletePost a Comment