শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস

শেখ বোরহানউদ্দিন কলেজ


প্রফেসর ড. ওয়াহিদ উদ্দিন আহমদ

সাবেক ভিসি, বুয়েট।


আদর্শ উন্নত মানব সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন যুগ শ্রেষ্ঠ সংস্কারক, আদর্শ মানব ইমামুত্ব ত্বরীক্বত ‘আল্লামা শায়খ সায়্যিদ মুহাম্মাদ বোরহানুদ্দীন উয়েসী (রাঃ)। জ্ঞানের আলোই পারে একজন সাধারণ মানষেকে উন্নত ও আদর্শ মানুষে পরিণত করতে। এ বিশ্বাসেই তিনি সর্বস্তরে শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞানের আলো ছড়াতে ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক, বৈজ্ঞানিক, সামাজিক, কারিগরী সর্বপ্রকার শিক্ষার এমন কি আনুষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সকল পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কিছু বাস্তবে শুরুও করেছিলেন। তাঁর পবিত্র বেস্বালের পর এরই জের ধরে শুরু হয় ম্যামোরান্ডাম এন্ড আর্টিক্যাল অব এসোসিয়েশনের ৩ {(সি) পৃঃ২} ধারার বাস্তবায়ন। এবং এর দায়িত্ব দেয়া হয় নেদায়ে ইসলাম এডুকেশন সাব কমিটিকে। নেদায়ে ইসলামের চেয়ারম্যানকেই এর চেয়ারম্যান করা হয়, নেদায়ে ইসলামের ডিপুটি চিফ শাহ মুহাম্মাদ এজাজ রসূল সাহেব অন্যতম সদস্য ছিলেন এবং প্রথম সেক্রেটারী ছিলেন আলহাজ্জ গিয়াস উদ্দীন আহমাদ।

নেদায়ে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এর নামানুসারে ঢাকায় শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় নেদায়ে ইসলাম এডুকেশন সাব কমিটির সভায় এবং এ কলেজের জন্য একটি এডহক কমিটিও গঠন করা হয়, যার চেয়ারম্যান করা হয় ঢাকার শেষ নবাব জনাব নবাব হাসান আসকরী সাহেবকে। জনাব সলীমুল্লাহ ফাহমী, অবসর প্রাপ্ত বিসিএস অফিসার জনাব আবদুর রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক জনাব সাইয়্যেদ আবদুল হাই, ডাঃ জুলফিকার আলী, জনাব আ.ফ. ম. সফিয়্যুল্লাহ, প্রিন্সিপাল আমীরুল হক এবং মাওলানা নুরুজ্জামানও নেদায়ে ইসলাম কর্তৃক গঠিত এ কলেজের এডহক কমিটির সম্মানিত সদস্যগণের তালিকায় ছিলেন।

প্রথম (ইনতিকাল দিবসে ৯ই মে ১৯৬৫ ইং) নেদায়ে ইসলাম এডুকেশন কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৬৫-৬৬ শিক্ষা বর্ষের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা বরাবরে দিবা ও নৈশ বিভাগে ইন্টামিডিয়েট ক্লাশসমূহ খোলার অনুমতি চাওয়া হয় এব একই সময়ে ডিগ্রী ক্লাসের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়। সে সময় সম্মানিত ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন ড. ওসমান গনী সাহেব। তিনি চেয়ারম্যান, নেদায়ে ইসলামকে একদিন বলেছিলেন যে , কলেজের সমস্যাটা একটু জটিল। কারণ, নেদায়ে ইসলাম কলেজ প্রতিষ্ঠা করছে সুখের বিষয়, তবে নেদায়ে ইসলাম একই সাথে কতটা কলেজ করেছে তা হিসেব করে দেখলেই বুঝা যাবে। প্রথমতঃ দুটি, দিবা ভাগে ইন্টারমিডিয়েট আর্টস এবং কমার্স, তেমনি নৈশ ভাগে। তদুপরি ডিগ্রীতে এবং তাও আবার দিবা-নৈশ উভয়টা, যা সাধারণ নিয়মে হতে পারেনা। যদিও তিনি একথা বলেছিলেন, কিন্তু ডঃমুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ সাহেবের জোড়ালো অনুরোধে একাডেমিক ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা তিনি করে দিয়েছিলেন। এমনিভাবে তাঁরই জামাতা প্রফেসর এমিরেটাস ডঃ মুহাম্মাদ সিরাজুল হক সাহেব ডীন থাকাকালীন এক মিটিং এ ডঃ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ সাহেব এমনি জোড়ালো বক্তব্য রাখেন যে তিনি অবাক হয়ে যান। কারণ, তাঁর শ্বশুড় সাহেবকে কোন দিন কোন বিষয়ে এমনিভাবে গুরুত্ব দিতে দেখেননি।

যাক কলেজ প্রতিষ্ঠার পর একে চলমান রাখতে যে কত কষ্ট নেদায়ে ইসলামকে করতে হয়েছে তা ভাবতে গেলে মনে অনেক কষ্ট লাগে। কারণ শিক্ষা বোর্ড অফিস থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বরং তাঁরা এমন ব্যবস্থাই নিতেন যাতে সময়মত ছাত্র ভর্তি সম্ভম না হয়। পরীক্ষার সময়ও নানা জটিলতা সৃষ্টি করত। শুনেছি তারা নাকি বলতেন যে, ‘মোল্লাদের আবার কলেজ করার শখ হয়েছে’ । একদিন ইনসপেক্টর অব কলেজের মন্তব্য শুনলাম যে, নাওয়াব হাসান আসকারী সাহেবকে কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে, এটাতো নামকা ওয়াস্তে সুপার ফ্লওয়াস। এ বিষয়টা পীর সাহেবকে জানালাম, কয়েকদিনের মধ্যেই নোটিশ পেলাম গভার্নিং বডির ইমার্জেন্সী মিটিং এর। যথা সময়ে মিটিং এ গেলাম। নাওয়াব আসকারী সাহেব সভাপতি হিসাবে সভা শুরু করলেন। কুরআন তিলাওআত ও স্বলাত-সালামের পর সভাপতি সাহেব বললেন যে, আমরা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা নেদায়ে ইসলামের আমীরে আ‘লা চেয়ারম্যান শায়খ মানুযূর আহমাদ সাহেবের কাছ থেকে কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানার ইচ্ছা প্রকাশ করছি এবং এ বিষয়ে বলার জন্য অনুরোধ করছি। উল্লেখ্য যে, সেদিনের সভায় কয়েকজন কর্মকর্তাসহ শিক্ষা বোর্ডের ইন্সপেক্টর অব কলেজ স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন । চেয়ারম্যান নেদায়ে ইসলাম হামদ ও দরূদ পড়ে নিজস্ব ভঙ্গিতে বলতে শুরু করলেন। তিনি বললেন, সকলের মনে রাখতে হবে যে, আলীগড় মুভমেন্টের আদর্শের পুনঃ জাগরণ এবং আলীগড় মুসলিম কলেজের উদ্দেশ্য পুনরায় বাস্তবায়িত করার জন্যই শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজের জম্ম। এর সাথে রয়েছে মহান সংস্কারক ইমামুত্ব ত্বরীক্বত (রাঃ)-এর নীতি ও আদর্শ। অর্থাৎ আল্লাহ ও তাঁর হাবীব স্বাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওআ আ-লিহী ওআ সাল্লামার প্রেম এবং সৃষ্টিকে ভালবেসে সেবার দীক্ষা। পরম শ্রদ্ধেয় মরহুম স্যার সাইয়্যেদ আহমাদ সাহেব ভারতের পশ্চাদপদ মুসলিম জাতিকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জনে ব্যবস্থা করার জন্যই আলীগড় মুসলিম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মুসলমান ছেলেরা যাতে ইসলামী পরিবেশে ইসলামী কৃষ্টি বজায় রেখে যোগ্য মুসলিম হতে পারে সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য আলীগড় মুসলিম কলেজ স্থাপিত হয়েছিল। ইংরেজী ভাষা শিখে ইংরেজ বনে যাওয়ার জন্য আলীগড় মুসলিম কলেজ তৈরি হয়নি। বরং ইংরেজদের সাথে মোকাবিলা করার মত যোগ্য মুসলমান গড়ার জন্যই আলীগড় মুসলিম কলেজের আবির্ভাব ঘটেছিল্ চেয়ারম্যান নেদায়ে ইসলাম এতটুকু বলতেই হঠাৎ ভীষণ আওয়াজে টেবিলে মুষ্টিবদ্ধ আঘাৎ করে নাওয়াব সাহেব বলতে লাগলেন-আব ডানডা কি যরূরাত থী। ন্যাশনাল প্রবলেম সলব করনেকে লিয়ে নেদায়ে ইসলাম কোশেশ কার রাহে হেঁ, লেকিন লোগ রোকাওয়াট পয়দা কার রাহে হেঁ………..। সবাই তো অবাক। সভা শেষ করে নাওয়াব সাহেব চলে গেলেন। আমরাও বের হচ্ছিলাম। ইন্সপেক্টর সাহেব আশ্চর্য হয়ে বলতে লাগলেন-নাওয়াব সাহেব যে এতো সিরিয়াস তো ভাবতেও পারিনি………….।

যা হোক কলেজ নানা উৎড়াই চড়াইর মধ্য দিয়ে অতি ধীরে অগ্রসর হচ্ছিল্ আর্থিক দিকে নেদায়ে ইসলামকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। এর নানাবিধ কারণ থাকলেও উল্লেখযোগ্য ছিল যে, শিক্ষা বোর্ড যখন ভর্তির অনুমতি দিত তখন লেইট-ফী ছাড়া ভর্তির সুযোগ থাকতো না। ঢালাওভাবে ছাত্র ভর্তি করা হতো না। শুধু মাত্র ছেলেদের জন্যেই নির্দিষ্ট ছিল। ছাত্র রাজনীতি ছিল নিষিদ্ধ। কলেজের বৈশিষ্ট্য ছিল লেখাজপড়া, আর নৈতিকতার আদর্শ নীতি। খেলাধুলা, বার্ষিক মীলাদ মাহফিল আর ৯ই মে ইমামুত্ব ত্বরীক্বত (রাঃ) এর বেস্বাল দিবস (ইনতিকাল দিবস) পালিত হতো।

প্রসঙ্গত যে কথা মনে পড়ল, শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজ প্রকৃতপক্ষেই লেখাপড়ার একটি আদর্শ পরিবেশ গড়তে সক্ষম হয়েছিল, এখানকার ছাত্রেরা লেখাপড়া ছাড়া অন্য কোন নীতি বুঝত না। ১৯৬৯ সালে ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে ছাত্র নেতা আসাদ যখন মারা যায় এবং মিছিলটি যখন নাজীমুদ্দীন রোডে অগ্রসর হতে থাকে, কলেজ বরাবর যেয়ে যখন ছাত্রদেরে ক্লাসে দেখতে পায় তখন ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। অগত্যা কলেজের প্রিন্সিপাল মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ কলেজের সেক্রেটারী শেখ মরতুজা হোসেন সাহেবকে ফোন করে ঘটনা জানালেন এবং অস্থির চিত্তে বলতে লাগলেন যে, স্যার? মব্ কলেজে ঢুকে পড়েছে ভাংচুর শুরু করেছে এমতাবস্থায় কী করবো স্যার? ভাগ্যবশতঃ চেয়ারম্যান নেদায়ে ইসলাম শায়খ মানযূর আহমাদ সাহেব সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সেক্রেটারী সাহেব তাঁকে ফোন দিলেন। প্রিন্সিপাল সাহেব তাঁর নির্দেশ চাইলে তিনি বললেন এক্ষনি স্লোগান দিয়ে ছাত্ররা বের হয়ে মিছিলে মিশে যাক। একথা ছাত্ররা শুনার সাথে সাথে বেরিয়ে পড়ল এবং কলেজ ভবনটি নিশ্চত ধ্বংশের হাত থেকে রক্ষা পেলো। উল্লেখ্য যে, সেদিন সারা দেশের মধ্যে গ্রামের একটি বিদ্যালয়েও ক্লাস হয়নি।

৫০নং নারিন্দার বাড়ীটা কালেজের পরিবেশের জন্য তেমন উপযোগী ছিলনা। ছাত্রদের সংখ্যা কিছুটা বাড়ছিল তদুপরি যাতায়াতের সুবিধার্থে লোকেশনটা আরো ভাল হলে ভাল হয়। তাই এ বিষয়ে নেদায়ে ইসলামি মনোনীত সেক্রেটারী শেখ মরতুজা হুসাইন পি,আর,এ,এস (একাউন্টেন্ট জেনারেল ওয়ার্কস) সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি নেদায়ে ইসলামের চেয়ারম্যানকে নিয়ে অনেক জায়গা খুঁজার পর………….৬২ নাজীমুদ্দীন রোডস্থ বাড়িটির (এককালে রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্রের ব্রডকাস্টিং সেন্টার) মালিক তাঁর জামাতা এডভোকেট শামসুল হক সাহেবের কাছে পাঠালেন। এডভোকেট সাহবে আলোচনার পর রাজী হলেন। আট হাজার টাকা অগ্রিম সে সময় দেয়ার মত না থাকাতে এক মাসের সময় দেয়া হয় তবে কলেজ স্থানান্তরের কাজ দেরী না করে ৮ ফেব্রুয়ারী ১৯৬৮ ইং তারিখেই স্থানান্তর করা হয়।

এর আগে অর্থাৎ ১৯৬৬ ইং সনের একটি ঘটনা উল্লেখ করছি।……..

শিক্ষা বোর্ড এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে যখন কলেজের জন্য নিজস্ব জমি ও ভবনের জোগান দেয়ার উপর বিশেষভাবে চাপ দিচ্ছিল তখন নেদায়ে ইসলাম কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন জায়গা খোঁজার কাজে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। সে সময়ই একদিন কলেজ গভর্নি বডির চেয়ারম্যান জনাব নবাব হাসান আসকারী সাহেব (তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন) চেয়ারম্যান নেদায়েকে কলেজের জন্য আহসান মঞ্জিল বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং সম্পত্তি দেখাবার জন্য নিজে সাথে না পেরে খাজা নাজিম উদ্দীন সাহেবের ছেলে খাজা সাইফুদ্দীন সাহেবকে চেয়ারম্যান নেদায়ে ইসলাম এবং কলেজ সেক্রটারী শেখ মরতুজা হোসেন সাহেবকে দেখিয়ে আনার জন্য পাঠিয়েছিলেন এবং খাজা শাহাবুদ্দীন সাহেবের জায়গাসহ সব কিছুই দেখিয়েছিলেন, ক্রেতার বেশে দেখেও এসেছিলেন তাঁরা। তখনকার সময়ে ৬ লাখ টাকা দাম উঠেছিল এবং নেদায়ে ইসলামকে সাড়ে চার লাখ টাকায় দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় তা ক্রয় করা সম্ভব হয়নি।

কলেজ প্রতিষ্ঠার পর সরকার থেকে স্পেশাল টাইপ অব গভার্নিং বডির অনুমোদনই ছিল সবচেয়ে কঠিন কাজ। কারণ আল্লাহই ভাল জানেন, তবে নটেরডাম, হলিক্রস, কুমিদিনী, টিএন্ডটি কলেজ সমূহে বিশেষ ধরণের গভার্নিং বডি থাকলেও শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজ ছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অস্পৃশ্য কিছু। নেদায়ে ইসলামের নাম শুনলে যারা বলত-ইসলাম টিসলাম আবার কোথেকে আসল? তাদের মাথা ব্যাথা তো ছিলই, তাছাড়া স্বার্থান্বেষী মহলের তৎপরতাও ছিল।

তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী আমজাদ হোসেন সাহেবের আমলে স্পেশাল টাইপ গভার্নিং বডি অনুমোদনের সব ফরমালিটিজ পুর্ণ করেও তা কার্য়কর করতে পারেন নি। স্বার্থান্বেষী মহল তা তদানিন্তন গভর্নরের হস্ত ক্ষেপে বানচাল করাতে সমর্থ হয়। জনাব জাস্টিস আবু সাঈদ চৌধুরী সাহেব গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের  মহামান্য রাষ্ট্রপতি যখন ১৯৬৯ইং সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভি.সি ছিলেন তখন এ বিষয়ে ইন্সপেক্টর অব কলেজেজকে শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজের স্পেশাল টাইপ গভার্নিং বডির জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহলের প্রভাবে ইন্সপেক্টর সাহেব তা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেন। শুনেছি কলেজের প্রিন্সিপাল অবশ্য বহুবার মাফ চেয়ে শেষ পর্যসন্ত মৃত্যুর কিছু দিন পূর্বে কৃপা পেতে সমর্থ হয়েছিলেন। নেদায়ে ইসলামের কিছু কিছু কাজে সম্পৃক্তও হয়েছিলেন। সে করণে হয়তবা তার ভাগ্যে জুটেছিল ফরাযীকান্দীর পীর সাহেব চেয়ারম্যান নেদায়ে নেদায়ের ইমামতীতে জানাযা। তিনি জানাযার দোয়ায় বলেছিলেন-আল্লাহ! এ কি তোমার খেলা! আমার হাত দিয়েই তুমি এ চেয়ারে তাকে বসিয়েছিলে আবার তার জানাযা পড়িয়ে এ হাত উঠিযে দোআ করায়ে শেষ বিদায় দিলে?

বলছিলাম গভার্নিং বডির কথা। প্রিন্সিপাল শহীদুল্লাহ মৃত্যুর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যোগ্য সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে একটি এডহক কমিটি করে দিয়েছিলেন কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহল তা কার্যিকর হতে দেয়নি বরং ফাইল পত্র জাতীয় বিশ্ববিদ্বালয়ে বুঝিয়ে না দেয়া সত্বেও সবাইকে হাত করে পাল্টা কমিটি তৈরী কর। নেদায়ে ইসলামের দরখাস্তের প্রেক্ষিতে তদানিন্তন উপাচাযের সাথে টেলিফোনে প্রায় ৪০ মিনিট আমার আলোচনাও হয়েছিল। প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নেদায়ে ইসলামের চেয়ারম্যানকে এবং কলেজের অপূর্ণ এডহক কমিটির লোকজন নিয়ে শুনেছি আলোচনায় বসেও ছিলেন ভিসি সাহেব। কিন্তু কোন্ কারণে হলোনা তা রহস্যাবৃত রয়ে গেছে, আজো

এ কথা ভাবা দরকার যে, যদি কেউ দেশের ও দশের বা জাতীর জন্য ভাল কাজ করতে যেয়ে বাধা গ্রস্থ হয় বা সর্ব মহলের বিশেষ করে সরকারী সহযোগিতা না পায় তা হলে মানুষ সমাজ সেবা বা ভাল কাজে আগ্রহী হবে কি করে? তাতে জাতি ক্ষতিগ্রস্থ হবে।


তথ্যসূত্রঃ নেদায়ে ইসলাম স্মরণিকা

Post a Comment

Previous Post Next Post