চার মযহাবের মূল্যায়ন: লা-মযহাবী ফিতনা (১১তম পর্ব)

মূল: ড: আবদাল-হাকিম মুরাদ(যুক্তরাজ্য)

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

মাজহাব কি এবং কেন


[Dr Abdal-Hakim Murad's online article

'Understanding the Four Madhhabs: The

problem with anti-madhhabism' - 11th episode]



বিঃদ্রঃ ১০ম পর্বের পড় থেকে। 


কোনো মুসলমানের পক্ষে প্রতিষ্ঠিত বিশেষজ্ঞ মতের বাইরে গিয়ে সরাসরি কুরআন ও সুন্নাহ থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হলে তাঁকে অবশ্যই মহা বিদ্বান হতে হবে, এ কথা খুব কম মানুষই

সিরিয়াসভাবে অস্বীকার করবে। স্বল্পশিক্ষিত ও অযোগ্য লোকদের দ্বারা শরীয়তের মূল উৎসকে ভুল বোঝার এবং ফলশ্রুতিতে শরীয়তের ক্ষতি সাধনের বিপদ একদম বাস্তব,

আরও পড়ুন স্ত্রীর প্রতি স্বামীর হক্ব

যে পরিস্থিতি দেখা গিয়েছিল চার মযহাব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার

পূর্ববর্তী সময়কালে প্রাথমিক যুগের মুসলমানদের জীবনকে, এমন কি কতিপয় সাহাবী (রা:)-এর জীবনকে আক্রান্তকারী বিভক্তি ও দ্বন্দ্বের কারণে। প্রাক ইসলামী জমানায় শাস্ত্র লিপিগত পাণ্ডিত্য-ঘাটতির দরুণ গোটা ধর্মসমূহ বিশ্বাসের দুর্বলতাজনিত ধ্বংসের মুখে পড়েছিল; আর তাই এটি অপরিহার্য হয়েছিল দ্বীন ইসলামকে (অনুরূপ) তুলনীয় কোনো পরিণতি থেকে সুরক্ষা করা। বেদআত ও বিকৃতির বিপদ থেকে একে রক্ষাকল্পে ‘উসূল’-এর মহান উলেমাবৃন্দ অতঃপর কঠিন শর্তাবলী আরোপ করেন, যা এজতেহাদের দাবিদার যে কাউকে অবশ্যঅবশ্যই পূরণ করতে হতো। এ সকল শর্তের

মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল: 

(ক) আরবী ভাষায় পাণ্ডিত্য, যাতে কেবল

ভাষাগত দিক থেকে শরয়ী অপব্যাখ্যার সম্ভাবনা কমানো যায়;

(খ) কুরআন ও সুন্নাহ সম্পর্কে সুগভীর জ্ঞান এবং প্রতিটি আয়াত ও হাদীস প্রকাশ হবার প্রেক্ষিত/পটভূমি, আর সেই

সাথে কুরআনের তাফসীর ও হাদীসের শরাহগুলোর সামগ্রিক জ্ঞান, এবং ওপরে আলোচিত সমস্ত ব্যাখ্যা-পদ্ধতি/কৌশল রপ্তকরণ;

(গ) হাদীসশাস্ত্রের বিশেষায়িত জ্ঞান, যেমন বর্ণনাকারীদের মূল্যায়ন ও ’মতন’ (মূল পাঠ/লিপি);

(ঘ) সাহাবা-এ-কেরাম (রা:), তাঁদের অনুসারী ও মহান ইমামবৃন্দের এতদসংক্রান্ত মতামত এবং ফেকাহশাস্ত্রের

বইপুস্তকে গৃহীত অবস্থান ও এর পক্ষে যুক্তি, পাশাপাশি কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে ’এজমা’ (ঐকমত্য) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তারও জ্ঞান;

(ঙ) ‘কেয়াস’ এবং এর বিভিন্ন ধরন ও শর্তাবলী সংক্রান্ত জ্ঞান;

(চ) নিজের সমাজ ও জনস্বার্থ (’মাসলাহাহ’)-বিষয়ক জ্ঞান;

(ছ) শরীয়তের সার্বিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য (’মাকাসিদ’) সম্পর্কে জ্ঞান; এবং

(জ) তীক্ষ্ণ মাত্রার মেধা ও ব্যক্তিগত (আত্মিক) পবিত্রতা অর্জন, এবং এর পাশাপাশি করুণা, সৌজন্যবোধ ও বিনয়ের সমন্বয় সাধন।


চলবে-------------।

Post a Comment

Previous Post Next Post